তানোর মূলতঃ কৃষি নির্ভর। এখানকার সিংহভাগ মানুষের জীবিকার প্রধান উৎস কৃষি। তাই এখানে গড়ে উঠেছে বেশ কিছূ কৃষি ভিত্তিক শিল্প প্রতিষ্ঠান। কুটিরশিল্পের মধ্যে রয়েছে: তাঁত, বাঁশের কাজ, কাঠের কাজ, সেলাইয়ের কাজ, স্বর্ণকার, কামার, কুমার সহ প্রভৃতি। এখানাকার প্রধান অর্থকারী ফসল: ধান, আলু, গম, পাট, পিঁয়াজ, রসুন, মৌসুমী শাকসব্জী।শিল্প ও কলকারখানার মধ্যে রয়েছে: সিমেন্ট কারখানা, আটা ও চাল কল, বরফ কল, ওয়েল্ডিং কারখানা, জুটমিলের ববিন তৈরির কারখানা (কামারগাঁ), আলু রাখার হিমঘর ৫টি (কাশেমবাজার, কালিগঞ্জ ২টি, দেবীপুর ২টি)।
বরেন্দ্র অঞ্চলের গেরুয়া প্রান্তর তানোর উপজেলা কৃষি নির্ভর। এখানকার মূল কৃষি ফসল ধান হলেও বর্তমানে পাল্টে যাচ্ছে তার চিত্রপট। ইতিমধ্যে আলু চাষে তানোর উপজেলার কৃষকদের মধ্যে ব্যাপক সাড়া ফেলেছে। তানোর উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের সূত্র মতে, চলতি বছরে ৮,৫০০ হেক্টর জমিতে আলু চাষের লক্ষ্যমাত্রা থাকলেও চাষ করা হয়েছে ১৩,১৯০ হেক্টর জমিতে। শুধু তাই নয় কৃষকদের মধ্যে আলু চাষ বৃদ্ধির ফলে তানোর পৌর এলাকার কাশেম বাজারে আমান কোল্ডস্টোর ও তালন্দ ইউনিয়নের দেবীপুরে সম্প্রতি রহমান কোল্ডস্টোর নির্মাণ করা হয়েছে। ইতিমধ্যে এই উপজেলায় আরও তিনটি কোল্ডস্টোর নির্মাণের জন্য জায়গা নির্ধারণ করা হয়েছে।এ নিয়ে তানোর উপজেলার বিশিষ্ট আলুচাষী মোহাম্মদ আলী বলেন, বর্তমানে আলু চাষ করে তেমন লাভবান হচ্ছে না কৃষক। যদি সরকার সরাসরি আমাদের থেকে আলু কিনে এবং বিদেশে আলু রপ্তানি করার ব্যবস্থা করে দেন তাহলে এই বরেন্দ্র অঞ্চলসহ তানোর উপজেলায় আলু প্রধান অর্থকারী ফসল হবে তাতে কোন সন্দেহ নেই। ৯০ দিনে আলু চাষ করে কৃষক যে লাভের মুখ দেখেছেন তার সাথে বাড়তিমাত্রা হিসেবে যোগ হয়েছে তানোর উপজেলার কৃষকদের উৎপাদিত আলু রপ্তানি। তবে পরীক্ষামূলকভাবে মান সম্পূর্ণ আলুচাষীদের আলু পাঠানো হচ্ছে তিনটি দেশে। সংশ্লিষ্ট সূত্র থেকে জানা গেছে, তানোরে উৎপাদনকৃত আলু রপ্তানি হচ্ছে বিশ্বের তিনটি দেশ মালয়েশিয়া, শ্রীলঙ্কা ও সিঙ্গাপুরে। উপজেলার কালনা আড়াদিঘীর মাঠে বিদেশে রপ্তানির জন্যে চাষ করা হয়েছিল আলু। জমি থেকে আলু উঠিয়ে পৌর এলাকার চাপড়া ফুটবল মাঠে এনে হলুদ প্যাকেটে দশ কেজির প্যাকেটজাত করা হয়। পরে তা ট্রাকযোগে সরাসরি পাঠানো হচ্ছে চট্রগ্রামে। সেখান থেকে রপ্তানি হচ্ছে মালয়েশিয়া, শ্রীলঙ্কা ও সিঙ্গাপুরে। নওগাঁ জেলার আত্রাই উপজেলার এক কৃষিবিদ এই আলু রপ্তানির কাজ করছেন।এ নিয়ে তানোর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো: শফিকুল ইসলাম জানান, তানোরে আলু বিদেশে রপ্তানি করা হচ্ছে। এর জন্য প্রথম থেকেই আলু চাষে রপ্তানিযোগ্য পরিচর্চা ও মান সম্পূর্ণ হতে হবে। এছাড়া আলু চাষীদের ন্যায্যমূল্য প্রাপ্তির জন্য সরকার যদি ধান, চাউলের মতো প্রান্তিক আলুচাষীদের কাছ থেকে নির্ধারিত মূল্যে আলু কিনেন তাহলে কৃষকদের জন্য আলু একটি লাভজনক ফসলে পরিণত হবে। (সূত্রঃbanglanew24.com প্রকাশঃ১ এপ্রিল ২০১৭খ্রিঃ )
পরিকল্পনা ও বাস্তবায়নে: মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ, এটুআই, বিসিসি, ডিওআইসিটি ও বেসিস